নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

সরদার বাদশা,নিজস্ব প্রতিনিধি।
খুলনা ডুমুরিয়ায় বানিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে পানি ফল বা পানি সিংড়া। এ ফল সরবরাহ করা হচ্ছে খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, রাজধানীঢাকাসহ সমগ্র বাংলাদেশে। এখন বাংলাদেশে পেরিয়ে ,পানি ফল বা পানি সিংড়া রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে। চাষে লাভজনক হওয়ায় পানি ফল চাষে ঝুকছে বাংলাদেশের ফসল চাষের উর্বর ভূমি ডুমুরিয়ার কৃষক চাষীরা । ডুমুরিয়ার আশপাশের বিভিন্ন বিল ও জলাশয়ে এ পানি ফল চাষ করা হচ্ছে । পানিতে জন্মে বলে এ ফলের নাম পানি ফল বা পানি সিংড়া স্থানীয় চাষীরা এই নামে ডেকে থাকে এই ফল কে। লতাপাতার মত জলাশয়ে ভাসতে দেখা যায় পানি ফলের গাছ । মৌসুমী ফসল হিসেবে পানি ফল চাষ করা হয় । অনেকে মাছের সাথে মিশ্রভাবেও পানি ফলের চাষ করে থাকে। পানি ফলে পানি ও প্রচুর খনিজ উপাদান থাকে বলে অভিমত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা ,ডুমুরিয়ায় পতিত খালবিল ও জলাশয় জুড়ে চাষ হচ্ছে পানি ফলের । লাভজনক হওয়ায় এ উপজেলায় প্রতিবছর বাড়ছে এ ফলের চাষ । প্রতিবছর যেমন চাষ বাড়ছে তেমননি প্রতিটি হাট বাজারে বেচাকেনাও বৃদ্ধি পেয়েছে । ফলে বেকারত্ব দূর হচ্ছে, কৃষকরা এই ফল চাষ করে স্বাবলম্বীও হচ্ছে । পানি ফল চাষ মূলত্র কম খরচে , কম পরিশ্রমে লাভজনক ফসল বলে জানিয়েছেন চুকনগর চাকুন্দিয়ার কৃষক মোঃ মনিরুজ্জামান হালদার, তিনি আরো বলেন আমরা পাঁচজন কৃষক মিলে পঁচিশ বিঘা জমিতে এই পানিফল চাষ করেছি ও ব্যাপক লাভবান হচ্ছি । খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় , আষাঢ় মাস থেকে ভাদ্র বা আশ্বিন মাস পর্যন্ত চারা লাগানো যায় । চারা লাগানোর দুই থেকে আড়াই মাস পর ফল তোলা যায় । প্রতি গাছ থেকে ৩ / ৪ বার ফল তোলা যায় । এভাবে পৌষ মাস পর্যন্ত ফল পাওয়া যায় । এ ফলের কোন বীজ নেই । মৌসুম শেষে পরিপক্ক ফল থেকে আবারও চারা গজায় । সে চারা পরে জলাশয়ে লাগানো হয় । তবে খুলনা কৃষি বিভাগ আশা করছে আগামী বছরে আরও বেশী জলাশয়ে এ ফলের চাষ হবে । উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নের লতা গ্রামের দীপঙ্কর বিশ্বাস বলেন , তিনি এ বছর সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে পানি ফল চাষ করেছে, ও বিগত চার বছর ধরে তিনি এই ফল চাষ করে আসছেন । খরচ অতি সামান্য খরচের তুলনায় প্রায় ১০ গুন লাভ হবে কৃষকের । এদিকে কম খরচে লাভবান হওয়ায় ডুমুরিয়ার কৃষকরা এ ফলের চাষে আগ্রহী হচ্ছে।এছাড়া উপজেলার বিল ডাকাতিয়া বিলে কৃষক নিরান বাড়ুই, কালিপদ জোয়াদ্দার, সুরজিৎ বাড়ুইসহ অনেক কৃষক লাগিয়েছে এই পানিফল ,সেখানকার খাল বিল জলাশয় জুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে পানি ফলের চাষাবাদ । প্রতিটি শহর ও গ্রামে এ ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে । সিদ্ধ করেও এ ফল খাওয়া যায় । বাজারে কাঁচা ফলের পাশাপাশি সিদ্ধ ফলও বিক্রি হয়ে থাকে । উপজেলার চুকনগর বাজারের ফল ব্যবসায়ী মোঃ শফিকুল ইসলাম , মোঃ হযরত মোড়ল, মোঃ আশেক আলীসহ অনেক ব্যবসায়ী জানান আশ্বিস থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত পুরোদমে এ ফল বিক্রয় করা যায় । সিজোনাল ফল হওয়ায় প্রতিদিন ১মণ ফল বিক্রয় করা সম্ভব । এতে প্রায় ৫/৬ শ টাকা লাভ হয় ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মোসাদ্দেক হোসেন বলেন , পানি ফল অত্যন্ত সুসাধু । ডুমুরিয়া থেকে পানি ফলসহ এর চারা দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে যাচ্ছে । কৃষি বিভাগ প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করছে । আগামীতে এ উপজেলায় পানি ফল চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা করেন ।
Leave a Reply